সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্ক স্টেডিয়াম আয়তনে বেশ ছোট। ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা যেখানে অনায়াসে ছয় মেরে বল ফেলেন স্টেডিয়ামের বাইরে। বাংলাদেশ দল এই মাঠে ওয়ানডেতে ৩০১ করেই শেষ পর্যন্ত ১৮ রানের জয় পেয়েছিল। সেই মাঠের উইকেটকে ব্যাটিং স্বর্গই বলা যায়। সেখানেই কি না বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ধুঁকতে হলো। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের বিপক্ষে ধুঁকতে হয়নি টাইগার ব্যাটসম্যানদের।
নিজেরাই আত্মহত্যা করেছেন বাজে সব শটে। ইনিংসের শুরুটাই যে ছিল বিব্রতকর এ রেকর্ডের।
ওয়ানডেতে দুই সেঞ্চুরি হাঁকানো তামিম ইকবাল প্রথম বলেই বের হয়ে এসে ছয় মারতে চাইলেন। হলোতো নাই, উল্টো আউট হয়ে গড়লেন লজ্জার রেকর্ড। এরপর অনেক যুদ্ধ হয়েছে। সাকিব, মাহমুদুল্লাহ, মুশফিকরা লড়াই করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সবাই বাজে শটেই জীবন দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত হাতে এক উইকেট অবশিষ্ট থাকলেও দল থামে ১৪৩ রানে। এমন ব্যর্থতার পর অধিনায়ক সাকিব কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন ব্যাটসম্যানদেরই। তিনি বলেন, ‘আমরা শুরুতে উইকেট হারিয়েছি, এটা একটা সমস্যা ছিল। আরেকটা ব্যাপার হলো, আমরা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট হারিয়েছি। শুরুতে উইকেট হারানোর পরও আমার আর লিটনের একটা জুটি হয়েছিল। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আমরা পরপর দুই বলে ফিরে যাই, এটা একটা বড় ধাক্কা ছিল।’
অবশ্য শেষ দুই ম্যাচ ওয়েস্ট ইন্ডিজে নয়। যে কারণে সাকিব স্বপ্ন দেখছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডাতে দল ঘুরে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, ‘সিরিজে ঘুরে দাঁড়াতে হলে আমাদের নিজেদের সেরা পর্যায়ে থাকতে হবে। আমরা পরের দু’টি ম্যাচ নতুন ভেন্যুতে খেলবো। আশা করি, সেই ভেন্যু আমাদের সঙ্গে মানানসই হবে। আমাদের এখন পরের দু’টি ম্যাচের দিকে তাকাতে হবে।’
অন্যদিকে প্রথম ম্যাচ হারের ময়নাতদন্তে তিনি সবদিক থেকেই ব্যাটিং ব্যর্থতাকেই বড় করে দেখছেন। কারণ শুরুর আঘাতের পরও ঘুুরে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ জুটি বেঁধে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু কঠিন সময়ে দু’জন আউট হন বাজে শট খেলে। এ নিয়ে সাকিবের আফসোস কম নয়। তারা টিকে থাকলে হয়তো ১৭০/১৮০ রানের একটি লক্ষ্য ছুড়ে দেয়া যেত বলেই বিশ্বাস করেন অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘মুশফিক ভাই, (মাহমুদউল্লাহ) রিয়াদ ভাইয়ের একটা জুটি হয়েছিল, পরে মুশফিক ভাই আউট হয়ে গেলো। আমরা যেভাবে নিয়মিত উইকেট হারিয়েছি তার জন্য মোমেন্টামটা পাইনি। তাই বড় স্কোর করতে পারিনি। যেমন উইকেট ছিল, আর এটা যেমন মাঠ এখানে অন্তত ১৮০ রান যদি করতে না পারি তাহলে লড়াই করাই কঠিন। সেদিক থেকে আমরা অনেক রান কম করেছিলাম।’ শুধু তাই নয়, প্রথম ১০ ওভারে যোগ হয়েছি ৯৫ রান।
কিন্তু পরের ১০ ওভারে টাইগারদের খুঁজেই পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে অধিনায়ক বলেন, ‘হ্যাঁ, (শেষ ১০ ওভারে কম রান হওয়া) নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। এটা হয়েছে শুরুতে দ্রুত উইকেট হারানোয়। আমরা ১০ ওভারের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলাম। দ্রুত ৫ উইকেট হারানোর পর যে কোনো দলের জন্যই ১৭০/১৮০ রান করা খুব কঠিন একটি কাজ। কারণ ঝুঁকি নিয়ে মারতে হয় শেষ দিকে।
এছাড়াও এই ১৪৪ রানের লক্ষ্য ছুড়েও লড়াই করতে পারতেন বলে মনে করেন সাকিব। কিন্তু বৃষ্টি এসে সেই স্বপ্নেও পানি ঢেলে দিয়েছে বলে মনে করেন অধিনায়ক। কারণ তখন ক্যারিবীয়দের সামনে লক্ষ্য ছিল ১১ ওভারে মাত্র ৯১ রান। এ নিয়ে সাকিব বলেন, ‘এই ধরনের উইকেটে ৯১ রান ডিফেন্ড করা খুবই কঠিন। ওদের কয়েকজন মানসম্পন্ন টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান আছে। ওদের বিপক্ষে জিততে হলে আপনাকে উইকেট নিতেই থাকতে হবে।’